লবঙ্গ (Syzygium aromaticum, অন্য নাম Eugenia aromaticum or Eugenia caryophyllata) এক প্রকারের মসলা। লবঙ্গ গাছের ফুলের কুড়িকে শুকিয়ে লবঙ্গ মসলাটি তৈরি করা হয়। খাদ্যদ্রব্যে মসলা হিসাবে এটি ব্যবহার করা হয়। লবঙ্গের আদি বাস ইন্দনেশিয়ায়, তবে বর্তমানে এটি পৃথিবীর সর্বত্র ব্যবহৃত হয়। জাঞ্জিবার, ইন্দোনেশিয়া ও মাদাগাস্কারে লবঙ্গ চাষ করা হয়। এছাড়া দক্ষিণ এশিয়ার বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কাতেও লবঙ্গের চাষ হয়ে থাকে।
লবঙ্গের সুগন্ধের মূল কারণ "ইউজেনল" (Eugenol) নামের যৌগ। এটি লবঙ্গ থেকে প্রাপ্ত তেলের মূল উপাদান, এবং এই তেলের প্রায় ৭২-৯০% অংশ জুড়ে ইউজেনল বিদ্যমান। এই যৌগটির জীবাণুনাশক এবং বেদনানাশক গুণ রয়েছে। লবঙ্গের তেলের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো অ্যাসিটাইল ইউজেনল, বেটা-ক্যারোফাইলিন, ভ্যানিলিন, ক্র্যাটেগলিক অ্যাসিড, ট্যানিন, গ্যালোট্যানিক অ্যাসিড, মিথাইল স্যালিসাইলেট, ফ্ল্যাভানয়েড, ইউজেনিন, র্যাম্নেটিন, ইউজেনটিন, ট্রি-টেরপেনয়েড, ক্লিনোলিক অ্যাসিড, স্টিগ্মাস্টেরল, সেস্কুইটার্পিন।
FAO এর ২০০৫ এর উপাত্ত অনুসারে ইন্দোনেশিয়াতে পৃথিবীর ৮০% লবঙ্গ উৎপাদিত হয়। দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে রয়েছে যথাক্রমে মাদাগাস্কার ও তাঞ্জানিয়া।
লবঙ্গকে আস্ত অথবা গুড়া অবস্থায় রান্নায় ব্যবহার করা হয়। এর গন্ধ কড়া বলে অল্প পরিমাণে দিলেই চলে। ইউরোপ ও এশিয়া মহাদেশের প্রায় সব দেশেই এর ব্যবহার বিদ্যমান। ইন্দোনেশিয়াতে ক্রেটেক নামের সিগারেটে সুগন্ধি হিসাবে লবঙ্গ ব্যবহার করা হয়। চীনা ও জাপানীরা ধুপ হিসাবে লবঙ্গ ব্যবহার করে থাকে।
ভারতীয় উপমহাদেশের খাদ্যে দীর্ঘকাল ধরে লবঙ্গ ব্যবহার করা হয়ে আসছে। মেক্সিকোর খাদ্যেও এর ব্যবহার রয়েছে। এসব এলাকায় জিরা ও দারুচিনির সাথে লবঙ্গকে ব্যবহার করা হয়।